সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২ | বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেতন কত

আমাদের ওয়েবসাইটে যারা দর্শক এবং যারা নতুন ভাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা প্রায়ই জানতে আগ্রহী যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেতন কত বা সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২। আজ আমরা গুগলে থাকা কিছু তথ্য রিসার্চ করে জানবো, একজন সৈনিক বেতন কত। এছাড়াও আমরা তুলে ধরব যতগুলো ক্যাটাগরি রয়েছে সকলের বেতন কত এবং নিয়মিত কিছু ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করব। আমরা আমাদের সাধ্যমত সঠিক তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব।

সেনাবাহিনীকে সাধারণত ৩ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা :

১ .  N.C.O – এনসিও অর্থাৎ Non Commissioned Officer – নন কমিশন্ড অফিসার।

২ . J.C.O – জেসিও অর্থাৎ Junior Commissioned Officer – জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার।

৩ . C.O – সিও অর্থাৎ Commissioned Officer – কমিশন্ড অফিসার।

সৈনিক থেকে সার্জেন্ট এদেরকে এনসিও বলা হয়ওরেন্ট অফিসার থেকে মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার এদেরকে জেসিও বলা হয় এবং অনারারী লেফটেন্যান্ট থেকে জেনারেল এদেরকে বলা হয় সিও

 

বিশেষ দ্রষ্টব্য : প্রত্যেক জনের বেতন স্কেল যা হবে অন্যান্য ভাতা সহ তার বেতন দ্বিগুণ হবে। অর্থাৎ সৈনিকের বেতন যদি হয় ৯ হাজার টাকা, তাহলে সে ভাতাসহ পাবে প্রায় ১৮ হাজার টাকা। তবে সকল ভাতা ইনক্লুড হতে হবে। যদি কিছু ভাতা বা চলে যায় তাহলে টাকা কম পাবেন। যেমন : আপনার যদি অবিবাহিত হন তাহলে আপনি ভাতা কম পাবেন, আপনার যদি সন্তান না থাকে তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনি কিছু ভাতা কম পাবেন এরকম কয়েকটি ভাতা যদি আপনার বাদ চলে যায় তাহলে আপনার দ্বিগুণের চাইতে কিছুটা কম হবে।

আরও পড়ুন : পুলিশ মাঠে কি করানো হয় | পুলিশ নিয়োগে যোগ্যতা ২০২২ – জানতে আর্টিকেল টি পড়তে পারেন। }

 

বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা ভাতা, টিফিন ভাতা সহ অন্যান্য ভাতা ছাড়াও তারা আরো কিছু বিশেষ দায়িত্ব দক্ষতার জন্য মূল বেতনের বাইরে আরও অনেক ধরনের বাড়তি ভাতা পেয়ে থাকে তাদের বিশেষ দক্ষতা বা দায়িত্বের জন্যে। এ দায়িত্ব অতিরিক্ত দায়িত্ব বহন করে নিতে হয়, তবে এগুলো সকলের জন্য প্রযোজ্য নয়। আমরা তুলে ধরার চেষ্টা করব সাধারণত যে সমস্ত ভাতা গুলো পেয়ে থাকে সেগুলো নিয়ে।

 

সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২

রিক্রুট সৈনিক এর বেতন কত

রিক্রুট সৈনিকের বেতন সাধারণত ৯০০০ টাকা হয়ে থাকে। তবে খুব ক্ষেত্র বিশেষে কেউ ৯৫০০০ পেতে পারে। এটা নির্ধারিত একটি বেতন। রিক্রুট হল তারা যারা ট্রেনিং অবস্থায় থাকে। এদের বেতন ট্রেনিং চলাকালীন দেওয়া হয়না, ট্রেনিং শেষে সমস্ত বেতন একসাথে দেওয়া হয়। একজন রিক্রুট কে শুধুমাত্র

মূল বেতন এবং চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। মূল বেতন ৯ হাজার এবং চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা। এরপরে মূল বেতন বাড়লোও চিকিৎসাভাতা একই রকম থেকে যায়, সৈনিক থেকে অনারারী ক্যাপ্টেন পর্যন্ত। প্রশিক্ষণ চলাকালীন ক্যান্টেমেন্ট থেকে  প্রয়োজনীয় সকল জিনিস কেনাকাটা করার সুযোগ দেওয়া হয় এবং আরো কিছু বাধ্যতামূলক খরচ থাকে যেগুলো একত্র করে ট্রেনিং শেষে হিসাব করে অবশিষ্ট টাকা দিয়ে দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ চলাকালীন নববর্ষ আসলে মূল বেতনের ২০ পার্সেন্ট ১৮০০ টাকা এবং আসলে মূল বেতনের সমপরিমাণ ৯০০০ টাকা দেওয়া হয়।

 

সেনাবাহিনীর ভাতা সমূহ

একজন সৈনিকের সাধারণ বেতন ৯৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২১,৫০০ পর্যন্ত হতে পারে। চলুন আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনে নিই, ট্রেনিং শেষে সৈনিক মাসিক হারে বেতন প্রদান করা হয়। সৈনিক হলেও বেতন একই থাকে তবে বিভিন্ন ভাতা দিয়ে টাকা প্রায় মূল বেতনের ডাবল হয়ে যায়। ৯৫০০ টাকা বেতনের সাথে অন্য একটি ভাতার দিয়ে হয় ৯৮১৫ টাকা। অবিবাহিত হলে বাড়িভাড়া মূল বেতনের ২০% এবং বিবাহিত হলে বাড়িভাড়া মূল বেতনের ৪৫%। চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা, প্রতিরক্ষা ভাতা ১৫০০ টাকা, তবে এই প্রতিরক্ষা ভাতা ৫ বছর পরপর এবং পদোন্নতিতে বৃদ্ধি করা হয়। যাতায়াত ভাতা ৩০০০ টাকা।

প্রাথমিকভাবে একজন সৈনিকের বেতন হবে ১৪,০০০ টাকা মতো। এটা সকল সৈনিকের নিধারিত বেতন। এর বাহিরে যারা পাহাড়ে ডিউটিরত থাকবে তাদের জন্য সর্বশেষ নির্ধারিত মূল বেতনের ২০% হারে ভাতা প্রদান করা হবে। এছাড়া প্রতিটি সৈনিকের থাকা ও খাবার সম্পূর্ণ ফ্রি এবং নিজের ও পরিবারের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ফ্রি সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেনানিবাসে ১ টা করে চিকিৎসা রয়েছে। যার চিকিৎসা গুনগতমান অত্যাধুনিক এবং উন্নত। প্রতি বছরের জুলাই মাসে একজন সৈনিকের তখনকার মূল বেতনের ৫% হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়। সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২

বিশেষ দ্রষ্টব্য : সকল ভাতা নির্ধারণ করা হবে আপডেট মূল বেতনের উপর নির্ভর করে। তবে বেতন বাড়তে বাড়তে সর্বশেষ বেতন বৃদ্ধি সীমায় পৌঁছে গেলে আর বেতন বৃদ্ধি হবে না। এছাড়া ১ টি সন্তানের জন্য ৫০০ টাকা এবং ২ টি সন্তানের জন্য ১০০০ টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা প্রদান করা হয়। ৩ টি সন্তানের উপর শিক্ষা প্রদান করা হয় না।

 

ল্যান্স কর্পোরাল এর বেতন কত

একজন ল্যান্স কর্পোরাল বেতন শুরু হয় ১০,২০০ থেকে সর্বোচ্চ ২৪,০০০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি হতে পারে। কেউ যদি সৈনিক পদে থেকে ল্যান্স কর্পোরালে পদোন্নতি হলে, ১০,২০০ এর উপরে বেতন হলে সৈনিকের তখনকার বেতন ম্যাচ হয়ে সেই বেতন পেতে থাকবে। সেটা থেকে ল্যান্স কর্পোরাল বেতন শুরু হবে। তখন বেসিক বেতন ১০,২০০ থেকে শুরু হবে না।

কর্পোরাল এর বেতন কত

এরপর কর্পোরালে সর্বনিম্ন ১০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে বেতন ২৬,০০০ পর্যন্ত বাড়বে।

সার্জেন্ট এর বেতন কত

একজন সার্জেন্টের সর্বনিম্ন ১৬,০০০ টাকা হতে শুরু করে ৩৮,৫০০ হাজার পর্যন্ত বেতন বাড়তে পারে। যদি প্রমোশন পদের স্টার্টিং বেতনের চেয়ে পূর্বের পদের বেতন কম হয়, তাহলে প্রমোশন পদ্ধতি স্টার্টিং বেতন থেকেই তার বেতন শুরু হবে। আর যদি কেউ এক্স্যন্সসে সার্জেন্ট হয় তবে তার বেতন ১৬,০০০ থেকে শুরু হবে। এছাড়া অন্যান্য ভাতাদি এটা আরো অনেক বৃদ্ধি হবে।

 

জেসিও বেতন স্কেল – J.C.O Pay Scale

ওয়ারেন্ট অফিসার এর বেতন কত

একজন ওয়ারেন্ট অফিসারের বেতন সর্বনিম্ন ২২,০০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৪৮,০০০ পর্যন্ত বাড়তে পারে

সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার এর বেতন কত

একজন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার বেতন সর্বনিম্ন ২২,২৫০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০,৪৬০ পর্যন্ত বাড়তে পারে

মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার এর বেতন কত

একজন মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার বেতন সর্বনিম্ন ২২,৫০০ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫৩,০০০ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

তো এই ছিলো, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২। আপনারা অনেকেই বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেতন কত তাই তার প্রেক্ষিতেই এই আর্টিকেল টি তৈরি করা। আমরা সব্বোর্চ্চ সঠিক তথ্য দেয়ার চেস্টা করেছি। আপনি যদি একজন সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে থাকেন তাহলে নিচের টা কমেন্ট করে দিয়েন আমাদের পক্ষ থেকে আপনার জন্য অসংখ্য দোয়া থাকবে। আর্টিকেল টি কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং কোন কিছু না বুঝলেও সেটি সম্পর্কেও প্রশ্ন করতে পারেন।

1 thought on “সেনাবাহিনীর বেতন স্কেল ২০২২ | বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বেতন কত”

Leave a Comment