আসসালামু আলাইকুম। আজকের বলবো, পুলিশ মাঠে কি করানো হয়, পুলিশ নিয়োগে যোগ্যতা। এই সব তথ্য আপনারা আর্টিকেলের মাধ্যমে জানতে পারবেন। বাংলাদেশ পুলিশের যোগদান করতে কি কি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন, কী কী শারীরিক মন থাকলে আপনি বাংলাদেশ পুলিশ আবেদন করতে পারবেন, পুলিশ মাঠে কি করানো হয়, এগুলোর পাশাপাশি আলোচনা করব, বাংলাদেশ পুলিশের লিখিত পরীক্ষায় কোন কোন বিষয় থেকে প্রশ্ন আসতে পারে, কত নম্বর পেলে আপনি বাংলাদেশ পুলিশের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবেন। তাছাড়াও রয়েছে মৌখিক পরীক্ষা এবং চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রক্রিয়া সহ বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ার সার্বিক তথ্যাবলী। পুলিশ মাঠে কি করানো হয়।
পুলিশ মাঠে কি করানো হয় – পুলিশ নিয়োগে যোগ্যতা
পুলিশ নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা
বাংলাদেশ পুলিশে আবেদন করার জন্য প্রার্থীকে নূন্যতম এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ ২.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে এবং যে কোন শাখার শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন। যেকোন শাখা বলতে বুঝানো হয়েছে, বিজ্ঞান মানবিক ও বাণিজ্য অথবা মাদ্রাসায় যেকোন শাখা থেকে এসএসসি পাস কৃত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।
পুলিশ নিয়োগে বয়স
বাংলাদেশ পুলিশের সকল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর হতে হবে। মানে, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২০ তারা আবেদন করতে পারবে। তবে মুক্তিযুদ্ধা কোটার প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স ৩২ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য।
পুলিশ নিয়োগে শারীরিক যোগ্যতা
শারীরিক যোগ্যতা ও পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা হচ্ছে ৫ ফিট ৬ ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩১ এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় হতে হবে ৩৩ ইঞ্চি। পুরুষ প্রার্থীদের মধ্যে যারা উপজাতি কোটায় রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে উচ্চতা হচ্ছে ৫ ফিট ৪ ইঞ্চি এবং বুকের মাপ একই। অর্থাৎ স্বাভাবিক অবস্থায় হচ্ছে ৩১ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় হতে হবে ৩৩ ইঞ্চি। এর পাশাপাশি নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা হচ্ছে ৫ ফিট ২ ইঞ্চি।
আরও পড়ুন : নৌবাহিনীর মাঠে কি কি করানো হয় | মাঠে যাওয়ার আগে ও পরে করনীয় কি – জানতে এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। }
পুলিশ নিয়োগে শারীরিক মাপ এবং শারীরিক পরীক্ষা
নির্ধারিত তারিখে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে নিজ জেলা পুলিশ লাইনস মাঠে উপস্থিত হতে হবে। শারীরিক পরীক্ষার শুরুতেই বিজ্ঞপ্তির বর্ণনা অনুযায়ী বয়স, উচ্চতা, বুকের মাপ এবং ওজন ঠিক আছে কিনা এই বিষয়গুলো মিলিয়ে নেয়া হবে। পরবর্তী ধাপে ফিটনেস যাচাই এর জন্য দৌড়, লংজাম্পে সহ রশি দিয়ে উপরে ওঠার মতো শারীরিক পরীক্ষা নেয়া হতে পারে। অধিকাংশ সময়ই এই ৩ টি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয় এবং সুখবর হচ্ছে : দৌড়, লংজাম্পে সহ রশি বেয়ে উপরে ওঠার যে প্রতিযোগিতা গুলো রয়েছে এখান থেকে কাউকে বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সুতরাং, এখানে তাড়াহুড়ো না করে খুব সাবধান থাকতে হবে যেন কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে।
প্রবেশপত্র বিতরণ
শারিরীক মাপ এবং পরীক্ষায় যারা টিকবে তাদেরকে পরবর্তী ধাপে প্রবেশপত্র বিতরণ করা হবে। প্রবেশপত্র বিতরণের সময় যেটি উল্লেখযোগ্য বিষয় সেটা হচ্ছে প্রবেশপত্র বিতরণের সময় বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত আপনার সকল কাগজপত্র সমূহ চেক করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে যদি বাবার জাতীয় পরিচয় পত্রের কথা উল্লেখ না থাকে তবুও সেটি সাথে করে নিতে হবে, কারণ সেটি সেটিও চেক করা হবে।
পুলিশ নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা
প্রবেশপত্র বিতরণের পর ঐদিন লিখিত পরীক্ষা হতে পারে অথবা লিখিত পরীক্ষার জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হতে পারে।
পুলিশের লিখিত পরিক্ষার জন্য কি কি বই পড়বেন?
লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপনারা যা যা বই পড়বেন সেই বই গুলো হচ্ছে : নবম ও দশম শ্রেণির ইংরেজি, বাংলা এবং সাধারণ গণিত বই গুলো আয়ত্ত থাকলে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষায় এমন কোনো প্রশ্ন আসবে না যেটা একজন এসএসসি পাস করা স্টুডেন্ট পারবে না। আপনি যদি নবম-দশম শ্রেণির ইংরেজি, বাংলা এবং সাধারন গনিত এই বইগুলো আয়ত্তে রাখতে পারেন তাহলে আপনি অনায়াসে লিখিত পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন। পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে এই বইগুলি দেখে রাখতে পারেন।
আরও পড়ুন : পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে মাঠে কি কি কাগজ নিয়ে যেতে হবে – জানতে এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন। }
পুলিশ নিয়োগে মৌখিক পরীক্ষা
যারা লিখিত পরীক্ষার জন্য টিকবে তাদেরকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য ডাকা হবে এবং মৌখিক পরীক্ষায় মার্কস থাকবে ২০ নাম্বার। কেউ যদি ২০ নাম্বার পায় তাহলে সে মৌখিক পরীক্ষায় কল পাবে। মৌখিক পরীক্ষার বিষয়ে মৌখিক পরীক্ষায় মোট নাম্বার হচ্ছে ২০ যেখানে ৪৫% নাম্বার পেলে পাস করতে পারবেন। মৌখিক পরীক্ষায় বিশেষভাবে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা হয়। যেমন : নিজ জেলা অথবা উপজেলা বিষয়ক যেকোন প্রশ্ন করতে পারে। বাংলা থেকে ইংরেজি ট্রান্সলেশন জিজ্ঞাস করতে পারে। এ ছাড়াও সাময়িক যে বিষয় গুলো রয়েছে সেগুলো সহ সাধারন জ্ঞান থেকেও প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারে।
মৌখিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে অবশ্যই যেটি মনে রাখবেন, সেটি হচ্ছে : ভাইবা বোর্ডে দেখা হয় আপনার কথা বলার ধরন, প্রশ্নোত্তর করার ধরন, আপনি কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করছেন সেই ধরনটি, আপনার অঙ্গভঙ্গি সহ কি ধরনের পোশাক পরে আপনি ভাইবা বোর্ডে গিয়েছেন সেই বিষয়গুলো কারণেই বিষয়গুলো আপনার ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ করে। সুতরাং অবশ্যই ভাইভা বোর্ডে যাওয়ার আগে মানসিকভাবে এই বিষয়গুলো মেন্টালি সেটআপ করে নিবেন।
পুলিশ নিয়োগে চূড়ান্ত নির্বাচন
লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নির্বাচিত প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা নেয়া হবে ।এই রিপোর্টে যারা যোগ্য বিবেচিত হবে তাদেরকে ৬ মাসের প্রশিক্ষণের জন্য মনোনয়ন দেয়া হবে। শারীরিক পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং চূড়ান্ত মনোনয়ন এর সবগুলো কাজ ১ থেকে ২ দিনের মধ্যে কমপ্লিট হতে পারে। কিংবা ভিন্ন ভিন্ন তারিখেও কমপ্লিট হতে পারে। এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করছে কর্তৃপক্ষের উপর।
বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সার্বক্ষণিক দেশের শান্তি রক্ষার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যেসকল ভাইয়া এবং বোনেরা বাংলাদেশ পুলিশে কর্মরত রয়েছেন এবং যারা যোগদানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন আপনাদের সকলের প্রতি রইল অনেক ভালোবাসা এবং শুভকামনা।
তো এই ছিলো পুলিশ মাঠে কি করানো হয় আর্টিকেল। আপনাদের আমি পুলিশ নিয়োগে যোগ্যতা, বাছাই, শারীরিক পরীক্ষা, পুলিশ নিয়োগে লিখিত পরীক্ষা সহ বেশ কিছু বিষয় বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করেছি।