আসসালামু আলাইকুম, আজকে আমি আপনাদের সাথে কথা বলব ই সিম নিয়ে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি ই সিমের যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দিব। ই সিম কী, ই সিমের সুযোগ সুবিধা, কোন ফোনে সাপোর্ট করে? এ সকল তথ্য আপনারা এই আর্টিকেলে পেয়ে যাবেন।
কত সাইজের সিম রয়েছে
আমরা রেগুলার রেগুলার সিম এতদিন যাবত ব্যবহার করে আসছি সেটা নিয়ে কিছু বলি। অতীত এবং বর্তমান মিলে আমরা এখন পর্যন্ত ৩ ধরনের সাইজ দেখে আসছি। সাইজগুলো হলো :
- মিনি সিম
- মিক্রো সিম
- নেনো সিম
ই সিম কী
ই সিম কী : ই সিম মানে হচ্ছে এমবেডেড সিম অথবা ইলেকট্রনিক্স সিম। আবার অনেকে এটাকে বলে থাকে ডিজিটাল সিম। আমি যদি আপনাদেরকে আইফোন থার্টি প্রো ম্যাক্স এর কথা বলি তাহলে এই ফোনটার মাঝে একটা সিম বিল্ডিং অবস্থায় থাকে আর ই সিমটা এই ফোনটার সাথে বিল্ট-ইন অবস্থায় আছে। কিন্তু সেখানে কোন নাম্বার অথবা কোন আইডেন্টিটি থাকে না। সেটা আপনাকে আলাদাভাবে নিয়ে নিতে হবে।
আপনি যদি বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরি করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেল টি পড়তে পারেন। এই বিজ্ঞপ্তি টি নতুন প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি। বাংলাদেশ রেলওয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২২ | গার্ড গ্রেড – ২ পদে ।}
ই সিম সংগ্রহ
ই সিম কোথায় পাবেন : ই সিম অবশ্যই আপনাকে মোবাইল অপারেটরের কাছ থেকে নিতে হবে। বাংলাদেশের সর্বপ্রথম গ্রামীণফোন ই সিম লঞ্চ করেছে। আপনি যদি ই সিম নিতে চান, তাহলে কোম্পানি থেকে কিউআর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে আপনার ফোনে সেটাকে সেট করে নিতে পারবেন। তাহলে আপনাকে আলাদা কোন ফিজিক্যাল সিম কার্ড ব্যবহার করতে হচ্ছে না। একটা মজার ব্যাপার হচ্ছে, একটা ফিজিক্যাল সিম কার্ড আপনাকে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে সেই সমস্ত সুযোগ সুবিধা গুলো পাওয়ার পাশাপাশি আপনি আরও বাড়তি কিছু সুবিধা পেতে পারেন ই সিমে থেকে। আপনি চাইলে আপনার পুরনো নাম্বারটাই ই সিমে কনভার্ট করতে পারবেন।
কিন্তু আপনি যদি একবার এসএমএস শিফট হয়ে যান তাহলে আপনার পুরনো ফিজিক্যাল সিম কার্ডটা বন্ধ হয়ে যাবে এবং আপনার ই সিম টা চালু হয়ে যাবে।
ই সিম হারিয়ে গেলে কি করবেন : চিন্তার কোন কারণ নেই, আপনার সিম কার্ড হারিয়ে গেলে আপনি কি করেন? – নতুন একটা সিম কার্ড তুলে আনেন তাই না। ঠিক তেমনি ভাবে কাস্টমার কেয়ার থেকে ই সিম টা তুলে আনতে পারবেন অথবা আপনি চাইলে আপনার সেই সিমটা কে বন্ধ করে দিতে পারবেন।
একবারে ই সিম চালু করলে পরবর্তীতে ফিজিক্যাল সিমের ফেরত আসা যাবে কিনা : অবশ্যই সেটা করা যাবে। বায়োমেট্রিক প্রসেস এর মাধ্যমে সেটা করা সম্ভব।
ই সিমের সুযোগ সুবিধা
ই সিমে সুবিধা : ই সিম পরিবেশ বান্ধব। কারণ ই সিম পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কোনো প্লাস্টিকের ঝামেলা নেই। ই সিম স্মার্টফোনের জায়গা দখল করবে যার ফলে স্মার্টফোনের অন্য কিছু বাড়ানো সম্ভব। যেমন : ব্যাটারি একটু বড় করা যেতে পারে অথবা স্মার্টফোনটি আরেকটু আকষনীয় করা যেতে পারে।
অনেক সময় আমরা সিম কার্ড বের করে ওয়ালেটে রাখি এবং পরবর্তীতে এর উপর বসে পড়ি যার ফলে অনেক সময় সিম কার্ডটা নষ্ট হয়ে যায়। দেখবেন ফেটে যায় অথবা চাপের ফলে সিমটা নষ্ট হয়ে যায়। তো এই ই সিমে ফিজিক্যাল ড্যামেজ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
দেশের বাহিরে গেলে ই সিম কিভাবে সেট আপ করবেন : আপনি যদি ফিজিক্যাল সিম ব্যবহার করে তাহলে আপনার যে দেশে যাবেন সেই দেশে গিয়ে আরেকটি সিম কিনে তারপর সেটি ফোনে ডুকাতে হবে। তবে ই সিমে বাহিরের দেশে গিয়ে কিউআর কোড স্ক্যান করে সিমটা আপনার ফোনে সেট করে নিতে পারবেন। এতে করে আপনাকে সিম কার্ড বের করে আরেকটি সিম কার্ড ঢুকাতে হচ্ছে না। এই কাজটা আপনি অনেক ইজিলি করে নিতে পারবেন।
ই সিমের প্রোফাইল : অনেক সময় আমরা একের অধিক সিম কার্ড ব্যবহার করে থাকি। দুইটা সিম ২ কারনে ব্যবহার করে থাকি। যেমন : একটা সিম কথা বলার জন্য, আরেকটা সিম ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য সেক্ষেত্রে আপনার এই সিমে যদি দুইটা প্রোফাইল সেট করা থাকে আপনি সেটা সুইচ করে আপনার প্রয়োজন মত ব্যাবহার করতে পারছেন। এখানে কিন্তু আপনার সিম কার্ডটি টেনে বের করা বা ঢুকানোর কোন প্রয়োজন পড়ছে না। আপনার ফোনে যদি প্রোফাইল সেট করা থাকে আপনি জাস্ট সুইচ করে সেটাকে ব্যবহার করতে পারছেন। আপনাকে আলাদা করে সিম কার্ডে ইন্সটল করতে হচ্ছে না এবং আপনার সিম ক্যারি করার ও কোনো ঝামেলা থাকছে না।
ই সিমের অসুবিধা গুলো
ই সিমের অসুবিধা : ধরুণ, যে কোন কারণে আপনার ফোনের চার্জ শেষ কিন্তু আপনার ওই সিমটা দরকার। তখন আপনি কি করবেন? ই সিম ফোনের ভেতরে সেট করা তখন আপনি চাইলেও সেই সিম টা বের করে আপনার বন্ধুর ফোনে ব্যবহার করতে পারবেন না। সো এটা একটা বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে।
এখনকার সময়ে আমরা অনেকেই বারবার ফোন চেঞ্জ করে থাকি আবার এমন অনেক মানুষ আছে যারা ৬ মাস পরপর ফোন চেঞ্জ করে থাকে। তো আপনার ফোনে যদি ই সিম ইন্সটল করা থাকে এবং আপনি বিক্রি করার সময় সেই সিমটা ডিজেবল করে দিলেন তারপর এসে ফোনটা কেউ বিক্রি করে দিলেন কিন্তু এই সিমটা তো আপনাকে ব্যবহার করতে হবে তাই না। সে ক্ষেত্রে নতুন ফোন কিনার পরে কিন্তু সেখানে আপনাকে নতুন করে প্রোফাইল সেট করতে হচ্ছে অথবা আপনি এমন একটা ফোন কিনলেন যেটাতেই ই সিম সাপোর্ট করে না তখন কিন্তু আপনাকে আবার কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে ফিজিক্যাল সিমে শিফট করতে হচ্ছে। এই ব্যাপারটা কিন্তু অনেক প্যারা লাগতে পারে।
ফোন রিসেট দিলে ই সিমের প্রোফাইল কি মুছে যাবে : জি হ্যা পুরোপুরি ডিলিট হয়ে যাবে। অনেক সময় আমাদের ফোন স্লো হয়ে যায় বা ফোনে ভাইরাস ঢুকতে পারে যে কারণে আমরা ফোন রিসেট করে থাকে ফ্যাক্টরি রিসেট করার সাথে সাথে কিন্তু এটা আপনার ফোন থেকে চলে যাবে। তখন কিন্তু আবার আপনাকে নতুন করে সেটা ইন্সটল করে নিতে হবে। তো এরকম কিছু বিষয় আছে যার কারণে অনেকের কাছে হয়তো ই সিমটা ভালো নাও লাগতে পারে।
কোন ফোনে সাপোর্ট করে?
ই সিম কোন কোন ফোনে সাপোর্ট করে : বর্তমান সময়ে গ্রামীণফোন বাংলাদেশি ই সিম নিয়ে এসেছে। আপনি চাইলে ৭ ই মার্চের পর থেকে আপনার ফোনে ই সিম এনাবল করতে পারবেন। ই সিম ইন্সটল করতে চাইলে অবশ্যই আপনার কাছে এমন একটা ফোন থাকতে হবে যেটাতে ই সিম সাপোর্ট করে। কারণ সব ফোনে কিন্তু ই সিম সাপোর্ট করেনা। বেশকিছু ফ্ল্যাগশিপ ডিভাইস সাপোর্ট করে আবার মিড রেঞ্জের কিছু স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলোতে সিম সাপোর্ট করে। আমি কিছু ছবি দিয়ে দিচ্ছি যেগুলো ই সিম সাপোর্ট করে : ফোনগুলোর নাম নিচের ছবিতে আপনারা দেখতে পারেন।
ই সিম কিনতে কি কি করা লাগে : একটা রেগুলার সিম কিনতে যে সমস্ত বায়োমেট্রিক প্রসেস থাকে ঠিক তেমনিভাবেই ই সিম কেনার ক্ষেত্রে সেই সমস্ত বায়োমেট্রিক প্রসেসগুলো আপনাকে করতে হবে। তারপরে আপনাকে একটা কিউআর কোড দেয়া হবে দেন আপনার সিম সাপোর্টেড স্মার্ট ফোনটি দিয়ে এই কিউআর কোড টাকে স্ক্যান করতে হবে। তাহলে এই প্রোফাইলটা আপনার ফোনে সেট হয়ে যাবে।
তো এই ছিলো ই সিম ই সিম কী? ই সিমের সুযোগ সুবিধা? কোন ফোনে সাপোর্ট করে? বিস্তারিত সকল তথ্য। এরকম টেকনোলজি রিলেটেড আপডেট পেতে হলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন। আল্লাহ হাফেজ।