সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয় – সেনাবাহিনীতে কি কি পরীক্ষা করা হয় 2022

যারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্বন্ধে তথ্য জানতে চান তাদের মূল জানার বিষয়টা থাকে যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয়। যারা একদমই নতুন যারা জানেনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঠে কি কি হয়, সেনাবাহিনীতে কি কি পরীক্ষা করা হয়, সেনাবাহিনীর মাঠে কি কি কাগজ পত্র লাগে। তবে আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করব আসলে সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয়।

 

সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয়

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঠে বেশ কিছু ধাপ অতিক্রম করতে হয় অথবা কিছু পরিক্ষায় অংশ নিতে হয়। সেই সকল পরিক্ষায় যদি আপনি সফল ভাবে উওীর্ণ হন তাহলে নিশ্চিতভাবে আপনার চাকরিটি হয়ে যাবে। তবে চলূন দেখে নেই, সেনাবাহিনীর মাঠে কি কি হয়।

 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঠের ধাপসমূহকে সর্বমোট ৭ টি ধাপে ভাগ করা যায়। যথা :
  • সেনাবাহিনী অনলাইনে আবেদন
  • পূর্ব প্রস্তুতি ও সেনাবাহিনী মাঠে যাওয়া
  • সেনাবাহিনী প্রাথমিক মেডিকেল
  • সেনাবাহিনী শারীরিক পরীক্ষা
  • সেনাবাহিনী চূড়ান্ত মেডিকেল
  • সেনাবাহিনী লিখিত পরীক্ষা এবং
  • সেনাবাহিনী মৌখিক পরীক্ষা

অনেকেই ভেবে থাকেন মাঠে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাঠ শুরু হয়। কিন্তু আসলে এরকমটা নয়। অনলাইনে আবেদন করা থেকে আপনার সেনাবাহিনীর মাঠ শুরু হয়ে যায়। আপনি মাঠে যেতে পারবেন কিনা সেটা নির্ভর করে অনলাইনে কতটুক ভালোভাবে আবেদনটি করেছেন তার উপর। ঠিক সেরকমভাবে ৭ টি ধাপ যেসকল প্রার্থীরা অতিক্রম করতে পারবে তাদের বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি নিশ্চিত হয়ে যাবে। সেনাবাহিনীতে কি কি পরীক্ষা করা হয়।

সেনাবাহিনী অনলাইনে আবেদন

মাঠে যাওয়া কিংবা সেনবাহিনীতে চাকরি করার ১ম ধাপ হলো অনলাইনে সঠিকভাবে আবেদন করা। বিজ্ঞপ্তিটা ভালোভাবে পড়ে আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। উচ্চতা, ওজন, বয়স ভালোভাবে হিসেব করে তারপর আবেদন ফরমটি সাবমিট করতে হবে। আবেদন ফর্মটি পূরণ করার সময় সেখানে উচ্চতা, ওজন, বয়স, ঠিকানা, সবকিছু সঠিক তথ্য দিয়ে দিবেন এবং খুব ভালোভাবে দিবেন।

কারণ অনেকেই বলেন যে, আমি সেনাবাহিনীতে আবেদন করেছি কিন্তু আমার এসএমএস আসছে না। এটার প্রধান কারণ হচ্ছে আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ না করা। অতএব, সঠিক ভাবে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে পাশাপাশি সঠিকভাবে আবেদন ফি জমা দিতে হবে।

পূর্ব প্রস্তুতি ও সেনাবাহিনী মাঠে যাওয়া

অনলাইনে আবেদন করার পরে আপনি নিজেকে সঠিকভাবে গড়ে তুলবেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জন্য। সেনাবাহিনীতে চাকরি করতে হলে প্রথমেই আপনার পূর্বপ্রস্তুতি বা পরিকল্পনা প্রয়োজন হবে। আপনাকে অবশ্যই শারীরিক, মানসিক এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। একমাএ পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি পারে লক্ষ্য অর্জন করতে। অনলাইনে আবেদনের পর আপনাদের ফোনে এসএমএস আসবে এবং সেই এসএমএসে উল্লেখ থাকবে কবে, কোথায়, কখন আপনার সেনাবাহিনীর মাঠ অনুষ্ঠিত হবে। সে সময় এবং তারিখ অনুযায়ী আপনাকে যথাযথ সময়ে মাঠে উপস্থিত হতে হবে।

বাড়ি থেকে বা এলাকা থেকে যদি মাঠের স্থান দূরে হলে তাহলে আপনাকে হাতে সময় নিয়ে যেতে হবে। তখন আপনি চেষ্টা করবেন একদিন আগে সেখানে চলে যাওয়ার। কেননা তাহলে আপনার ঘুমটা ভালো হবে এবং শরীরটা ফিট থাকবে। সেনাবাহিনীর মাঠে যাওয়ার আগে অবশ্য বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত সবগুলো কাগজপত্র সাথে করে নিয়ে যাবেন।যেগুলো সত্যায়িত করতে বলা হয়েছে সেগুলো অবশ্যই সত্যায়িত করে নিবেন। যদি আপনি সেনাবাহিনীতে কি কি কাগজপএ নিতে হয় সেটি না জানেন তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন – সেনাবাহিনীতে আবেদন করতে কি কি কাগজ লাগে । 

সেনাবাহিনী প্রাথমিক মেডিকেল

সেনাবাহিনীর মাঠে প্রবেশ করলে আপনাদেরকে মাঠে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়াতে বলা হবে এবং তখন আপনাদের সাথে থাকতে হবে : এসএমএস আসা ফোনটি, ১০০ টাকা, প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র। পরবর্তীতে আপনাদের সিরিয়াল অনুযায়ী একটি রুমে নেয়া হবে। তখন আপনাদের গায়ে থাকবে : একটি জার্সি এবং হাফ প্যান্ট। প্রাথমিক মেডিকেলে আপনাদের শরীরে প্রাইভেট পার্ট ছাড়া বাকি সবই খুঁটিনাটি দেখা হবে। যেমন : হাত, পা, নাক, চোখ, মুখ, গলা, কণ্ঠ, উচ্চতা, ওজন, হাঁটাচলা, দাঁড়ানো এসব কিছু দেখা হবে।

আপনারা জানেন যে, আমাদের এই ওয়েবসাইটে সেনাবাহিনীতে কি কি কারণে বাদ দিয়ে দেয়া হয় সেটি নিয়ে আর্টিকেল দেয়া রয়েছে আপনারা চাইলে সেটি পড়ে আসতে পারেন – কি কি সমস্যা থাকলে সেনাবাহিনীর চাকরি হয় না

সেনাবাহিনী শারীরিক পরীক্ষা

প্রাথমিক মেডিকেলে যারা টিকে যাবেন তাদেরকে পরবর্তীতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে কিছু পরিক্ষায় অংশ নিতে হবে। যেমন : দৌড়, পুশ আপ এবং সাঁতার। বেশিরভাগ দৌড় পুশ আপ দেয়া হয় পাশাপাশি লং জাম্পও থাকে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাঁতারও দেয়া হয়। দৌড় এবং পুশ আপ থেকে কাউকে বাদ দেয়া হয় না বরং য়েন্ট দেয়া হয়। প্রাথমিক মেডিকেলে আপনাদের কিছু পয়েন্ট দেওয়া হবে এবং শারীরিক পরীক্ষায় সেখানে থেকে কিছু পয়েন্ট দেয়া হবে। এ পয়েন্টগুলো যোগ করে যাদের পয়েন্ট বেশি থাকবে তাদেরকে পরবর্তীতে চূড়ান্ত মেডিকেলে পাঠানো হবে।

সেনাবাহিনী চূড়ান্ত মেডিকেল

মনে রাখবেন চূড়ান্ত মেডিকেলে আপনার গায়ে জামা, কাপড় থাকবে না সেখানে মেডিকেল টিম থাকবে। তারা আপনার শরীলের সব কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করবে।

সংক্ষিপ্তভাবে বলতে গেলে চূড়ান্ত মেডিকেলে যা হয় : প্রাথমিক মেডিকেলে যে বিষয়গুলো দেখার বাকি থাকে সেগুলো চূড়ান্ত মেডিকেলে দেখা হয়ে থাকে। আমাদের প্রাইভেট অর্গান গুলোতে কোন সমস্যা রয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে দেখা হয়। এই ধাপে আপনি টিকে গেলে তাহলে আপনাকে লিখিত পরিক্ষায় অংশ নিতে হবে।

সেনাবাহিনী লিখিত পরীক্ষা

আপনারা অনেকেই জানেন না, সেনাবাহিনীর লিখিত পরিক্ষায় কি কি আসে এবং কোথা থেকে আসে। আপনি যে পদে আবেদন করছে যাবেন সেই পদের শিক্ষগত যোগ্যতা যা চাওয়া হবে সেই অনুযাযী আপনাকে পড়তে হবে। যেমন : আপনি যদি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে আবেদন করতে চান তাহলে সৈনিক পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা হচ্ছে এসএসসি পাশ। তাই এসএসসির অংক, বাংলা এবং ইংরেজি থেকে প্রশ্ন গুলো এসে থাকে। অতএব, আপনার পদে যে শিক্ষাগত যোগ্যতা দেয়া রয়েছে সেই অনুযায়ী পড়েন তাহলেই সেনাবাহিনীর লিখিত পরিক্ষা পাশ করতে পারবেন।

সেনাবাহিনী মৌখিক পরীক্ষা

লিখিত পরীক্ষায় যারা টিকবেন তাদেরকে পরবর্তীতে ভেরিফিকেশন করা হবে এবং সর্বশেষ ধাপে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় আপনাদের কিছু প্রশ্ন করা হবে এবং যদি আপনার সেই সকল প্রশ্নে উওর দিতে পারেন তাহলে আপনি উওীর্ণ হবেন।

এই ৭ টি ধাপ যারা সঠিকভাবে অতিক্রম করতে পারবেন তাদেরকে সেনবাহিনীতে নিয়োগ করা হবে অথবা নিযুক্ত করা হবে। পরবর্তীতে প্রশিক্ষণের জন্য তাদেরকে মনোনীত করা হবে।

 

তো এই ছিলো – সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয় আর্টিকেল। সেনাবাহিনীর মাঠে মূলত কি কি হয়ে থাকে বা সেনাবাহিনীতে কি কি পরীক্ষা করা হয়। সেই সকল বিষয় বিস্তারিতভাবে বুঝানোর চেস্টা করেছি। আশা করছি আপনারা বুঝতে পারছেন। যদি কেন কিছু না বুঝে থাকেন তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

1 thought on “সেনাবাহিনী মাঠে কি কি করতে হয় – সেনাবাহিনীতে কি কি পরীক্ষা করা হয় 2022”

Leave a Comment